গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: ইয়ামিন ইসলাম ইমন।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পাড়কোনা মহাশ্মশানে র্যাব-৭ এ কর্মরতঃ সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকাল ১০ টায় সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহার লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িটি তার গ্রামের বাড়ি কোটালীপাড়ার তারাশিতে পৌছায়। লাশবাহি গাড়িটি আসলে পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী একনজর দেখাতে পলাশের বাড়িতে ভীড় করে।
পরিবারের লোকজন পলাশের মৃত্যুর জন্য তার স্ত্রীকে দায়ী করে তার শাস্তির দাবী জানায়। এর পর বেলা ১১টায় র্যাব-৬ এর পক্ষ থেকে পলাশের লাশের উপর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।পরে পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে সম্মান জানানো হয়।পরে দুপুরে পলাশের মরদেহ কোটালীপাড়া উপজেলা সদরের পাড়কোনা মহাশ্মাশানে সম্পন্ন হয়।
সরজমিনে গিয়ে পলাশের বাড়ি কোটালীপাড়ার তারাশি গ্রামে দেখা গেছে, সিনিয়র এএসপি পলাশ সাহার মৃতদেহ গ্রামের বাড়ি তারাশিতে আসলেই মা রমারানী সাহার আহাজারীতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। মায়ের কান্নার সাথে সেখানে থাকা এলাকাবাসীর চোখের কোনায় পানি জমে ওঠে।
মৃত পলাশের মা কান্নার মধ্যে বার বার ছেলের বউয়ের নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন আর বলেন, ৩/৪ মাস হলেঅ আমার ছেলেকে একটা রাতও ঠিকমত ঘুমাতে দিতনা। সব সময় ঝগড়াঝাটি করতো। কোন কাজ করতো না সব কাজ আমি করতাম। ঝগড়ার মধ্যে আমার পরান পলাশকে হত্যার হুমকি দিত। আমি অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাকেও গালাগালি করতো।
পলাশ সাহার ভাই নন্দ লাল সাহা বলেন, মাকে পলাশ কেন বেশী ভালোবাসে এটাই আমার ভাইয়ের কাল হয়ে দাড়িয়েছি। পলাশ কিন্তু স্ত্রী ও মাকে সমান ভালোবাসতো। বিয়ের পর থেকেই পলাশের স্ত্রী সুষ্মিতা মাকে দেখতে পারতো না। মা পলাশের সাথে থাকুক তা সে চাইতো না। বাড়ি পাঠিয়ে দেয়ার জন্য চাপ সৃস্টি করতো। মাঝে মথ্যে ঘর থেকে বেরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে মা ও ভাইতে ভয় দিত। যাতে মাকে পলাশ বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। যেদিন মারা গেল সেদিন মা ও পলাশকে মারপিট করে পলাশের স্ত্রী। সে যাতে পালিয়ে যেতে না পারে এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
এদিকে, পলাশ সাহার এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না গ্রামবাসী। পলাশের মতো নিরীহ ও মেধাবী ছেলে এই গ্রামে অন্যটি ছিল না। তার এ ভাবে চলে যাওয়ায় আমরা এলাকাবাসী খুবই শোকাহত।এই ঘটনার উযুক্ত বিচার হওয়া দরকার তা না হলে এই ধরনের অপরাধ বৃদ্ধি পাবে।
এএসপি পলাশ সাহা কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের শিক্ষক মৃত বিনয় কৃষ্ণ সাহার ছেলে। ৩ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে পালাশ ছিল সবার ছোট। গত বুধবার র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পের তৃতীয় তলা থেকে এএসপি পলাশ সাহার মরদেহ উদ্ধার করে। মা ও স্ত্রীকে নিয়ে তিনি চট্টগ্রামে কর্মস্থলে থাকতেন। গ্রামের বাড়িতে থাকে তার বড় দুই ভাই।